কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়

কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়? সাধারণত আমাদের মধ্যে অনেকেরই এ বিষয়গুলো অজানা। কিন্তু এইডস যে একটি মারাত্মক রোগ এটা আমাদের  জানা উচিত। কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়? এই সম্পর্কেও আমাদের ধারনা থাকা উচিত। আমরা আজকের এই আলোচনায় কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়
যেহেতু এটি একটি মারাত্মক রোগ সেজন্য আমরা কত মাসে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়, এর লক্ষণ গুলো কি কি, এগুলো প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের করণীয় কি বা আমরা কোন কোন উপায় অবলম্বন করতে পারি সে সম্পর্কে নিজেরা জানবো এবং অন্যদেরকেও জানাবো।

পেজ সূচীপত্রঃ কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়

ভূমিকা

এইডস হচ্ছে একটি ইংরেজি শব্দ, এর পূর্ণরূপ হল Acquired Immuno Deficiency Syndrome যার অর্থ হল অর্জিত প্রতিরক্ষার অভাবজনিত রোগ লক্ষণ সমষ্টি। এই রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের নাম হল HIV(Human Immunodeficiency Virus) যার অর্থ হল মানব প্রতিরক্ষা অভাব সৃষ্টিকারী ভাইরাস। এই ভাইরাস মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা প্রতিরক্ষা নষ্ট করে দেয়।
যার কারণে একজন এইডস রোগী যে কোন সংক্রামক রোগের দ্বারা খুব সহজেই আক্রান্ত হয় এবং এর পরিণতিতে তার মৃত্যুও হতে পারে। আজকের আর্টিকেলে এইচআইভি বা এইডস রোগের লক্ষণ এবং এইডস সম্পর্কে অন্যান্য সকল তথ্য জানানো হবে। তাই এইডস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

এইডস রোগ হওয়ার কারণ

এটি একটি ভাইরাস সংক্রমণজনিত রোগ। এইচআইভি ভাইরাস এই সংক্রমণের জন্য দায়ী। এই ভাইরাস শরীরে বিভিন্ন উপায়ে প্রবেশ করতে পারে, তবে এটি শরীরে প্রবেশের প্রধান মাধ্যম হল অনিরাপদ যৌন মিলন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির যৌন সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

এছাড়াও, এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত অন্য ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করতে পারে, যা  সংক্রমণের ঝুঁকি আরো বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত মাদক বা নেশা জাতীয় পদার্থ বা ধূমপানের অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের ফলে এই ভাইরাসের আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে, এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি হতে পারে এবং তাদের পেটে থাকা সন্তানও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

একইভাবে, একই ইনজেকশনের ব্যবহারের পরিণামে এই ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে। এই রোগ থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে অনিরাপদ যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যের ব্যবহৃত ইনজেকশন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। রোগীকে রক্ত দেওয়ার আগে রক্তদানকারীর রক্ত পরীক্ষা করতে হবে এবং সকল ধরনের মাদক বা নেশা জাতীয় পদার্থ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।

কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়

কোন মানুষের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস প্রবেশের পরে কত মাসে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় সে সম্পর্কে সকলের জানা অত্যান্ত জরুরী। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পর পরই এর লক্ষণ প্রকাশ পায় না। এটি আমাদের শরীরে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার পরে এই এই রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। সে সময়টা কতটুকু সে সম্পর্কে আমরা এখন জানবো।

সকলের জ্ঞাতার্থে বলে রাখি যে এই ভাইরাসের সংক্রমণের অনেকদিন পরে লক্ষণ প্রকাশ পায়। অনেকের মতে ৮ থেকে ১০ বছরের বেশি সময় লাগে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে। প্রাথমিক পর্যায়ে যদি কেউ এই রোগ ধরতে পারে তাহলে তার জন্য এই রোগের চিকিৎসা করা অনেকটা সহজ হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ না পাওয়ার কারণে আক্রান্ত রোগী বুঝতেই পারে না যে সে এই রোগে আক্রান্ত।

যার ফলে অনেক দেরি হয়ে যায় যখন সে জানতে পারে যে সে এইডস দ্বারা আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে এই ভাইরাসের আক্রমণের প্রথম তিন সপ্তাহে গলায় ও মাথায় কিছু সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু এই সমস্যাগুলো পরবর্তীতে ঠিক হয়ে যায়। তাই এর থেকে বাঁচতে হলে যেসব কারণে আমাদের শরীরে এ ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সেসব কাজ করা থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে।

কতদিন পর এইডস রোগ টেস্ট করতে হয়

কতদিন পর এই রোগ টেস্ট করতে হয় সে সম্পর্কেও আমাদের ধারণা থাকা উচিত। আমরা সকলেই জানি যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে অনিরাপদ যৌন মিলন। এই রোগের অন্যান্য কারণ থাকলেও এটিকেই প্রধান বিবেচনা করা হয়।

আমরা আগেই জেনেছি যে এই ভাইরাস শরীরের প্রবেশের দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই এই রোগের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। ব্যক্তিভেদে লক্ষণ গুলো ভিন্ন হতে পারে। আপনার শরীরে এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথেই আপনাকে এইচআইভি বা এইডস রোগের টেস্ট করা উচিত। আপনার রিপোর্ট যদি নেগেটিভ আসে তারপরেও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ছয় মাস পরে আবার এইচআইভি টেস্ট করা উচিত।
কারণ আপনার শরীরে যদি এইচআইভি ভাইরাস থাকে তাহলে এই সময়টাতে সেটা চিহ্নিত করা অনেক সহজ হয়। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া অধিকাংশ মানুষেরই এ  সময় এইচআইভি টেস্ট করলে পজিটিভ রিপোর্ট আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

এইডস রোগী কত দিন বাঁচে

আমরা ইতিমধ্যে কত মাসে এইডস এর লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং কতদিন পরে এই রোগের টেস্ট করাতে হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আমাদের মধ্যে অনেকেরই এই ধারণা রয়েছে যে এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তি বেশি দিন বাঁচে না।

বর্তমানে গোটা বিশ্বে অনেক লোক এই রোগে আক্রান্ত এবং এ রোগে আক্রান্ত হলেই যে মানুষ মারা যায় এটি একটি ভুল  ধারণা। কোন ব্যক্তি যদি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং এটা যদি সে বুঝতে পারে তাহলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে এ ভাইরাস কে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

কেননা এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানেই  যে আপনার এইডস হয়েছে বিষয়টা কিন্তু তেমন নয়। এটা সত্য যে এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় কিন্তু আপনি যদি শক্ত মনোবল নিয়ে এই রোগের সাথে লড়াই করতে পারেন তাহলে এটি থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

শেষ কথাঃ কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়

আমরা জানি এইডস একটি মারাত্মক রোগ। তাই এই রোগ সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কিছু ধারণা রাখা প্রয়োজন। যাতে করে আমরা এই রোগ থেকে বা এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতে পারি। যদি আপনার রোগ সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে আপনি সেটা প্রতিরোধ করতে পারবেন না।
আর যদি রোগ সম্পর্কে আপনাদের ধারণা থাকে তাহলে এটি প্রতিরোধ করা বা এর চিকিৎসা করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা এইডস রোগের লক্ষণ কখন প্রকাশ পায় এবং এর সাথে সম্পৃক্ত কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে আমাদের কমেন্টে জানাবেন। সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Dev Serp এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url