দুবাই তে কি কি ব্যবসা করা যায় - দুবাই ব্যবসা লাইসেন্স করতে খরচ

দুবাই তে কি কি ব্যবসা করা যায় এই সম্পর্কে যারা জানতে চান আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আপনারা যারা দুবাইয়ে ব্যবসা করতে আগ্রহী তারা দুবাই তে কি কি ব্যবসা করা যায় এ সম্পর্কে জেনে সেখানে ব্যবসা করতে পারেন। আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে দুবাই তে কি কি ব্যবসা করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
দুবাই তে কি কি ব্যবসা করা যায়
দুবাই আরব আমিরাতের একটি ধনী প্রদেশ হওয়ার কারণে বিভিন্ন দেশের মানুষ সেখানে ব্যবসা করে বেশি বেশি লাভবান হতে চাই। কিন্তু সেখানে ব্যবসা করার আগে জানতে হবে সেখানে কি ধরনের ব্যবসা করা যায় এবং ব্যবসা করার জন্য যে লাইসেন্স লাগে সেটা তৈরিতে কত খরচ হয়। আমাদের এই পোস্টটি সে সম্পর্কেই।

পেজ সূচীপত্রঃ দুবাই তে কি কি ব্যবসা করা যায় - দুবাই ব্যবসা লাইসেন্স করতে খরচ

ভূমিকা

দুবাই হলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি আমিরাত। আরব আমিরাতের সাতটি প্রদেশের মধ্যে একটি প্রদেশ হলো দুবাই। এটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান ব্যবসায়ীক কেন্দ্র। এই শহরটির এত বেশি উন্নয়নের কারণ হচ্ছে সেখানকার মাটির নিচে পাওয়া তেল । এই প্রদেশের অর্থনীতি বাণিজ্যিক কর, বিমান চালনা, রিয়েল স্টেট, পর্যটন এবং আর্থিক পরিষেবা থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপর নির্ভরশীল।
এই প্রদেশটি বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প, বড় বড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং বড় বড় হোটেল নির্মাণ করে গোটা বিশ্বের নজরে এসেছে। ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বরের সরকারি তথ্য অনুযায়ী এর আনুমানিক জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৩৬ লক্ষ।

দুবাই তে কি কি ব্যবসা করা যায়

কোন দেশে বা প্রদেশে ব্যবসা করার আগে সেখানে কি কি ধরনের ব্যবসা করা যায় সে সম্পর্কে জানাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং দুবাইয়ে ব্যবসা করতে হলে আগে জানতে হবে সেখানে কোন কোন ধরনের ব্যবসা করা যায়। এই প্রদেশে কি কি ব্যবসা করা যায় তা নিচে দেওয়া হলো।
  • এখানে কনস্ট্রাকশন এজেন্সি খুলে কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা করা যায়।
  • ট্রাভেল বা ট্যুরিজম এজেন্সি খুলে ব্যবসা করা যায়।
  • সোনার ব্যবসা এখানকার একটি লাভজনক ব্যবসা।
  • রিয়েল স্টেট বিজনেস করেও অনেক লাভবান হওয়া যায়।
  • আপনারা একটি হোটেল বা রেস্টুরেন্ট খুলে সেখানে ব্যবসা করতে পারেন।
  • লজিস্টিক বা ইলেকট্রনিক্সের দোকান খোলা যায়।
  • এছাড়াও কনফেকশনারির দোকান খুলে ব্যবসা করা যায়।

দুবাই ব্যবসা লাইসেন্স করতে খরচ

কোনো দেশে বা প্রদেশে ব্যবসা করার আগে সেখানে কি কি ধরনের ব্যবসা করা যায় সেটা জানার পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যবসা করার জন্য সে দেশের বা প্রদেশের ব্যবসার লাইসেন্স তৈরি করা। কেননা লাইসেন্স ব্যতীত আপনি কোনো দেশে বা কোনো জায়গায় কোন ধরনের ব্যবসা করতে পারবেন না। আর যদি তা করেন তাহলে সেটা অবৈধ হবে।
দুবাইয়ের আইন ব্যবস্থা অত্যন্ত কঠোর। সেখানে চুরি করলে হাত কেটে দেওয়া হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন সেখানে অবৈধভাবে ব্যবসা করা কতটা বিপদজনক। আপনি যদি দুবাইয়ে ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে একটি LLC লাইসেন্স তৈরি করতে হবে। আর এই LLC লাইসেন্স তৈরি করতে আপনার খরচ হবে প্রায় দুবাই ২০ হাজার দিরহাম বা বাংলাদেশী ৫ লক্ষ ৯৯ হাজার ৮০০ টাকা।

দুবাই কি ব্যবসা করলে লাভ করা যাবে

দুবাইয়ে কি ব্যবসা করে লাভ করা যায় সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে যে ব্যবসা করবে তার উপরে। কারণ কোন ব্যবসা করতে হলে সেই ব্যবসা সম্পর্কে আগে আপনাকে ভালোভাবে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং ধারণা নিতে হবে। কেননা এগুলোর উপরে ব্যবসার লাভ লস নির্ভর করে। বর্তমানে দুবাইয়ে ভালো চলছে এমন কিছু ব্যবসা হলো
  • রিয়েল স্টেট
  • গোল্ড
  • ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম
  • ইলেকট্রনিক্স
  • লজিস্টিক
  • হোটেল
  • রেস্টুরেন্ট
  • কনফেকশনারি
  • পার্সোনাল কেয়ার

২ লাখ টাকা দিয়ে কি ব্যবসা করা যায়

২ লাখ টাকা দিয়ে দুবাইতে বিভিন্ন ধরনের বাবসা করা যেতে পারে। কিছু উদাহরণ হলো

ওয়ালেট প্রার্থী প্রকল্পঃ আপনি মোবাইল এক্সেসরিজ, কার্ডহোল্ডার, বার্মুদা, লেদার আইটেমস ইত্যাদি তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন।

কেটারিং সেবাঃ আপনি দুবাইতে কেটারিং সেবা প্রদান করতে পারেন যেমন বিভিন্ন ধরনের পার্টি বা বিয়ের অনুষ্ঠানে খাদ্য ডেলিভারি করা সহ অন্যান্য কাজকর্ম সম্পাদন করা।

পোশাক উৎপাদন এবং বিক্রয়ঃ আপনি কাপড়ের উৎপাদন করতে পারেন এবং তা দুবাইতে বিক্রি করতে পারেন বা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করতে পারেন।

ই-কমার্স বা অনলাইন বিক্রিঃ আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে পারেন যেমন বই, গেমস, কমিকস, ইত্যাদি।

সেবা প্রদানঃ আপনি দুবাইতে সেবা প্রদানে জড়িত হতে পারেন যেমন গার্ডিং, সাফারি পরিষেবা, খাদ্য সেবা, মাসটার ক্লাস ইত্যাদি।

এই উদাহরণগুলি বিভিন্ন ধরনের সেবা এবং উৎপাদনের মধ্যে থাকতে পারে। আপনি আপনার অবকাঠামো, আগ্রহ এবং বাজেটের ভিত্তিতে একটি বা একাধিক বাবসা করার চেষ্টা করতে পারেন।

তিন লক্ষ টাকা দিয়ে কি ব্যবসা করা যায়

৩ লক্ষ টাকা দিয়ে দুবাইতে বিভিন্ন প্রকারের ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। কিছু উদাহরণ হলো

সৌদি আরবের নামকরণ সেবাঃ আপনি দুবাইতে সৌদি আরবের নামকরণ সেবা প্রদান করতে পারেন। মালিকানা সৃষ্টিকরণ, কোম্পানির নিবন্ধন এবং অন্যান্য সেবা প্রদান করা যেতে পারে।

স্বতন্ত্র ব্যবসা পরিচালনাঃ আপনি একটি নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন। যেমন বিক্রয় এবং পরিবহন প্রতিষ্ঠান, মানুষের সেবা বা স্বতন্ত্র কাজ প্রদান।

ই-কমার্স বা অনলাইন বিক্রিঃ আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে পারেন। যেমন কম্পিউটার সংযোগকরণ, পোস্টার ইত্যাদি।

পোশাক বিক্রয়ঃ আপনি পোশাক বা ফ্যাশন পণ্য বিক্রি করতে পারেন। যেমন সাড়ি, পাঞ্জাবি, ইত্যাদি।

খাবার সেবাঃ আপনি রেস্তোরাঁ, কেকের দোকান, হোটেল ,কেটারিং এর মাধ্যমে খাবার সেবা প্রদান করতে পারেন।

এই উদাহরণগুলি সহজ ব্যবসা আইডিয়া প্রদান করে যাতে আপনি আপনার ৩ লক্ষ টাকা নির্দিষ্ট উদ্যোগে প্রয়োজনীয় হিসাবে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনার আগ্রহ এবং অনুমানের ভিত্তিতে ব্যবসা চয়ন করুন।

১ কোটি টাকা দিয়ে কি ব্যবসা করা যায়

১ কোটি টাকা দিয়ে দুবাইতে বিভিন্ন প্রকারের বাবসা করা সম্ভব। একেবারে সবগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে দেওয়া কিছুটা জটিল, কারণ বাবসা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত সূচি দেওয়া সম্ভব নয়। তবে নিচে কিছু কার্যকলাপের উদাহরণ দেওয়া হলো।

ব্যবসা কোম্পানি স্থাপনাঃ আপনি দুবাইতে নিজের ব্যবসা কোম্পানি স্থাপন করতে পারেন। এটি তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের নিবন্ধন এবং অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

বিনিয়োগঃ আপনি দুবাইতে বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ করতে পারেন।

কেন্দ্র প্রতিষ্ঠান পরিচালনাঃ আপনি দুবাইতে কেন্দ্র প্রতিষ্ঠান চালাতে পারেন। যেমন হোটেল, রেস্তোরাঁ, মল বা অন্যান্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা।

ব্যবসা নির্বাচনঃ আপনি দুবাইতে আপনার স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক ব্যবসা নির্বাচন করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ আপনি বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে পারেন এবং তা দুবাইতে বিক্রি করতে পারেন।

প্রতিষ্ঠান তৈরি করাঃ আপনি একটি নিজস্ব বা মানুষের জন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারেন। যেমন হেলথ সেবা, প্রশিক্ষণ সেন্টার, প্রফেশনাল সেবা ইত্যাদি।

উল্লেখিত কার্যকলাপগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দুবাইয়ের ব্যবসায়িক নীতিমালা এবং পদক্ষেপ সম্পর্কে আপনার আশে পাশের ব্যবসা সম্প্রসারণ অধিকারী থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।

শেষ কথাঃ দুবাই তে কি কি ব্যবসা করা যায় - দুবাই ব্যবসা লাইসেন্স করতে খরচ

আমরা জানি যে দুবাই একটি ধনী প্রদেশ। আর তাই অনেকেই এই প্রদেশে এসে ব্যবসা করতে আগ্রহী। এসব আগ্রহী মানুষদের জন্য আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে দুবাইতে গিয়ে সেখানে কি কি ধরনের ব্যবসা করা যায় এবং সেখানে গিয়ে ব্যবসা করার জন্য যে লাইসেন্স প্রয়োজন সেটা করতে কতটা খরচ হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
আশা করি যারা সেখানে ব্যবসা করতে আগ্রহী আমাদের আর্টিকেল পড়ে তারা সেখানে ব্যবসা করার ধরনটা অনেকখানি বুঝতে পারবে। যদি আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের কোন উপকার বা কাজে আসে তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Dev Serp এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url