বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম

অনেকেই আছেন যারা বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। কারণ তারা এই ব্যবসা করতে চান এবং এটি করতে গেলে অবশ্যই বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম জানতে হবে। আপনাদের সুবিধার্থে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম এবং এটা করতে গেলে কি কি প্রয়োজন সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম
মানুষকে বিনামূল্যে ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে এই কোম্পানি। আপনি কিছু শর্ত পূরণ করে একজন বিকাশ এজেন্ট হওয়ার মাধ্যমে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেন। এই ব্যবসা করার নিয়ম জানানোর পাশাপাশি এ ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি সম্পর্কেও আমরা এই পোস্টে আলোচনা করব। তাই পোস্টটি ভালোভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম

ভূমিকা

বর্তমানে বিকাশ আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় ব্যবসা। এই ব্যবসা করে আমাদের দেশের অনেকেই টাকা উপার্জন করছেন। আপনি যদি একজন বিকাশ এজেন্ট হতে চান তাহলে দুই ভাবে হতে পারেন। সিম কার্ডে কোন বিকাশ একাউন্ট খোলা নেই এমন একটি সিম কার্ড নিয়ে আপনি তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারেন অথবা ডিস্ট্রিবিউটার অফিস থেকে আবেদন করে একজন এজেন্ট হতে পারেন।
এজেন্ট হওয়ার পরে এই ব্যবসা কোন কোন ভাবে বা উপায়ে করলে লাভ বা মুনাফা বেশি আসবে এই সব উপায়গুলো আপনাকে আগে জানতে হবে। ব্যবসা সম্পর্কে আপনার নলেজ যত ভালো হবে আপনার ব্যবসা ততটা ভালো হবে। তাই সবকিছুর আগে আপনাকে জানতে হবে।

বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয়

বিকাশ এজেন্ট হয়ে ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই এজেন্ট হওয়ার নিয়ম ও শর্তগুলো সম্পর্কে ভালভাবে জানা প্রয়োজন। বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন চলুন তাহলে জেনে নিই।

অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে বিকাশ এজেন্ট হয়ে ব্যবসা করতে হলে কত টাকা প্রয়োজন? আসলে এক্সট্রা কোনো টাকা লাগে না বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য। কিছু শর্ত সাপেক্ষে আপনি ফ্রিতে এজেন্ট হতে পারবেন। শর্তগুলো উল্লেখ করা হলো।
  • একটি এজেন্ট সিম মাক্সিমাম ৫০০ টাকা দিয়ে আপনাকে ক্রয় করতে হবে।
  • এজেন্ট হতে হলে অবশ্যই আপনার নিজস্ব একটি দোকান থাকতে হবে।
  • আপনি ভাল ব্যবসা করেন এবং আপনার দোকানে অনেক কাস্টমার আসে এটির নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
  • আপনার টিন সার্টিফিকেটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
  • এছাড়াও প্রয়োজন হবে আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড, সত্যায়িত ছবি এবং একটি সিম কার্ড।

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম

আপনি যদি শর্তাবলী পূরণ করার মাধ্যমে একজন এজেন্ট হয়ে যান তাহলে আপনার পরবর্তী কাজ হবে বিকাশ এজেন্ট হয়ে ব্যবসা করার নিয়মগুলো সম্পর্কে জানা। আপনাদের সুবিধার্থে ব্যবসা করার কিছু নিয়ম নিচে তুলে ধরলাম।
  • আপনাকে একজন এজেন্ট হিসেবে আপনার একাউন্ট থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ২ হাজার টাকার লেনদেন করতে হবে।
  • সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকা আপনাকে আপনার একাউন্টে রাখতেই হবে। আর এজেন্ট হওয়ার পরে প্রথমবার আপনাকে সর্বনিম্ন এক লক্ষ টাকা আপলোড করতে হবে।
  • এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য আপনাকে প্রতিমাসে কমপক্ষে পাঁচটি পার্সোনাল একাউন্ট খুলে দিতে হবে।
একজন এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা করতে হলে আপনাকে এই শর্তাবলী বা নিয়মগুলো অবশ্যই পালন করতে হবে।

বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা

এই ব্যবসা শুরু করার পূর্বে বিকাশের ব্যবসায় লাভ কেমন হয় এবং একজন এজেন্টকে বিকাশ কর্তৃপক্ষ কত টাকা কমিশন দিয়ে থাকে এই ধরনের প্রশ্ন আপনাদের মনে আসে। একজন এজেন্ট কত টাকা কমিশন পায় চলুন তাহলে জেনে নিই।

একজন এজেন্ট হিসেবে যদি আপনি *২৪৭# এই নাম্বারটি ডায়াল করে লেনদেন করে থাকেন তাহলে আপনি ৪.১০ টাকা করে কমিশন পাবেন প্রতি হাজারে। এই হিসাব অনুযায়ী আপনি যদি ১০ হাজার টাকা লেনদেন করেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন ৪১ টাকা এবং আপনি যদি এক লক্ষ টাকা লেনদেন করেন তাহলে আপনার কমিশন আসবে ৪১০ টাকা।

কিন্তু আপনি যদি অ্যাপের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যবসা করেন তাহলে আপনি প্রতি হাজারে ৪.৫০ টাকা কমিশন পাবেন, অর্থাৎ ১০০০০ টাকায় আপনার কমিশন আসবে ৪৫ টাকা এবং ১ লক্ষ টাকায় আপনার কমিশন আসবে ৪৫০ টাকা শুধুমাত্র অ্যাপ ব্যবহার করার কারণে।

বিকাশের একটি এজেন্ট অ্যাপ রয়েছে যার মাধ্যমে লেনদেন করাটা খুবই সহজ এবং নিরাপদ। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি যেকোনো ধরনের বিল খুব সহজে পরিশোধ করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি কত টাকা লেনদেন করেছেন তার একটি সুন্দর তালিকাও আপনি এই অ্যাপসে পেয়ে যাবেন। আশা করি বিকাশ এজেন্ট এর ব্যবসা করলে কত টাকা কমিশন পাওয়া যায় সেটা বুঝতে পেরেছেন।

বিকাশের ব্যবসা করার ১০টি উপায়

আপনি যদি চান একটি ব্যবসা করে সেখান থেকে ভালো মুনাফা উপার্জন করতে তাহলে আপনি এই ব্যবসা করতে পারেন। এই ব্যবসা কিভাবে করলে সেখান থেকে ভালো মুনাফা পাওয়া যাবে তার ১০ টি উপায় আপনাদের সুবিধার্থে নিচে তুলে ধরছি।
  • এই ব্যবসা করার জন্য প্রথমত আপনাকে যা করতে হবে তা হল সুন্দরভাবে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতে হবে।
  • বিকাশের ব্যবসা শুরু হলে যাতে তা বজায় রাখতে পারেন সেজন্য হাতে পর্যাপ্ত মূলধন রাখতে হবে।
  • ব্যবসা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন পার্সোনাল একাউন্ট তৈরি করা, আর তাই পার্সোনাল একাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে মানুষকে আগ্রহী করতে হবে।
  • যে কোন কৌশলে প্রতিদিন বেশি বেশি লেনদেন করতে হবে।
  • আপনাকে আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি একটি ব্যবসায়ীক এলাকায় তৈরি করতে হবে। কারণ ব্যবসায়ীক এলাকায় মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অনেক লেনদেন হয়।
  • আপনার মনোবল শক্ত করতে হবে যদি আপনি এই ব্যবসায় সফল হতে চান।
  • আপনার এজেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত লেনদেন করুন।
  • বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করুন। কারন এই অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করলে আপনি অতিরিক্ত মুনাফা পাবেন।
  • লেনদেন করার পরে অবশ্যই নিজের ব্যালেন্স চেক করুন।
এই ব্যবসা করে যে লাভ হবে সেই টাকা দিয়ে আপনার বিকাশ এজেন্টের ব্যবসাকে আরো বড় পরিসরে করার চেষ্টা করুন।

শেষ কথাঃ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম

যে সকল মানুষ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করতে চান তাদের জন্য আমরা এই ব্যবসার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা যদি আপনি সেটা ভালোভাবে করতে পারেন। তবে প্রত্যেকটি ব্যবসায় লাভ ক্ষতি রয়েছে। আপনারা যাতে ব্যবসা করে ক্ষতির সম্মুখীন না হন তাই আপনাদের সুবিধার্থে এ ব্যবসা করার কিছু উপায় আমরা আমাদের আর্টিকেলে আলোচনা করেছি।
আশা করি এগুলো আপনাদের উপকারে আসবে এবং এই উপায় কাজে লাগিয়ে আপনারা আপনাদের ব্যবসায় লাভ করতে পারবেন। এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Dev Serp এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url